আল্লাহ তাআলা পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু। বান্দার গুনাহের বোঝা যতই ভারী হোক না কেন, তিনি সবসময় ক্ষমার দরজা খোলা রেখেছেন। এমনকি আকাশ-জমিন পরিমাণ গুনাহ থাকলেও আন্তরিক তওবার মাধ্যমে তিনি ক্ষমা করে দেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, “আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী ও অতিশয় দয়ালু।” (সুরা নিসা: ১০৬)
আল্লাহর ক্ষমার প্রশস্ততা:
হাদিসে কুদসিতে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, “হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি ততদিন তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব, তুমি যা-ই করে থাকো আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করব, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।” (তিরমিজি: ৩৫৪০)
তওবার মাধ্যমে গুনাহের পরিবর্তন:
শুধু তাই নয়, তওবার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহগুলোকে নেকিতে পরিণত করে দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “কিন্তু যারা তাওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন।” (সুরা ফুরকান: ৭০)
এর একটি অর্থ হলো, আল্লাহ তাআলা বান্দার অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। যেমন, আগে যে পাপাচার করত, এখন সে সৎকর্ম করে। আগে শিরক করত, এখন এক আল্লাহর ইবাদত করে। আরেকটি অর্থ হলো, পাপগুলোকে নেকিতে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়, যেমনটি হাদিসে এসেছে।
তওবা: জান্নাতের সোপান:
বেশি বেশি তওবা করা অনুগত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। নবীজি (স.) কোনো গুনাহ না থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন ১০০ বার তওবা করতেন। তওবা করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হন এবং এটি জান্নাতের পথ খুলে দেয়। তাই, দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভে কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশমতো প্রতিদিন তওবা করা আমাদের জন্য জরুরি।
আসুন, আমরা সবাই আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তওবা করি এবং তার ক্ষমা ও রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তওবা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।