cropped-Icon.png
Loading ...
বৃহঃ. এপ্রি ১০, ২০২৫

কোনো দেশের উন্নতি নির্ভর করে বহু বিষয়ের উপর। প্রাকৃতিক সম্পদ, ভৌগোলিক অবস্থান, জনগণের কর্মক্ষমতা – এগুলো যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই অপরিহার্য একটি স্তম্ভ হলো সঠিক রাজনীতি। একটি সুস্থ ও জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। বিপরীতে, ভুল নীতি ও দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব একটি সম্ভাবনাময় দেশকেও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

সঠিক রাজনীতির মূল ভিত্তি হলো জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। যখন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেন, তখন উন্নয়নের পথে আর কোনো বাধা থাকে না। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি – এই সবই সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের ফল।

উন্নয়নের ক্ষেত্রে সঠিক রাজনীতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হলো সিঙ্গাপুর। স্বাধীনতার পর দেশটি চরম দারিদ্র্য ও সংকটের মধ্যে ছিল। কিন্তু লি কুয়ান ইউ-এর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্ব সিঙ্গাপুরকে বিশ্বের অন্যতম উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং শিক্ষার উপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর আজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও উন্নত জীবনযাত্রার প্রতীক। তাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জনগণের প্রতি সরকারের আন্তরিকতাই এই অভাবনীয় সাফল্যের মূল কারণ।

“সঠিক রাজনীতি একটি দেশের উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করে, যার উপর দাঁড়িয়ে থাকে সমৃদ্ধির স্বর্ণালী ভবিষ্যৎ।”

অন্যদিকে, আমরা দেখতে পাই যেসব দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বিদ্যমান, সেসব দেশ উন্নয়নের পথে বহু পিছিয়ে রয়েছে। জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়, বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারায় এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট হয়। এর ফলস্বরূপ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং সাধারণ মানুষ চরম কষ্টের শিকার হয়।

সঠিক রাজনীতি কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা সামাজিক ন্যায়বিচার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশ সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই কিভাবে একটি শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং জনকল্যাণমুখী নীতি একটি উন্নত ও সুখী সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনগণের অংশগ্রহণ এবং সরকারের স্বচ্ছতা উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

তবে সঠিক রাজনীতি রাতারাতি তৈরি হয় না। এর জন্য প্রয়োজন একটি সচেতন ও শিক্ষিত নাগরিক সমাজ, যারা তাদের অধিকার সম্পর্কে অবগত এবং যারা সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারে। একইসাথে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতা এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা অপরিহার্য।

পরিশেষে বলা যায়, একটি দেশের ভবিষ্যৎ তার রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। সঠিক নীতি, স্বচ্ছ প্রশাসন এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতাই একটি দেশকে উন্নয়নের স্বর্ণশিখরে পৌঁছে দিতে পারে। আমাদের সকলেরই উচিত এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করা, যেখানে দেশপ্রেম ও জনকল্যাণই হবে প্রধান চালিকাশক্তি। तभी আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *