হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ শহরে তীব্র জল সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে অধিকাংশ টিউবওয়েল ও পাম্প। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা। সুপেয় জলের জন্য হাহাকার করছেন সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, খাল-বিল, পুকুর ও জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। প্রচণ্ড গরম, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া, অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি নির্মাণ এবং যত্রতত্র সাবমারসিবল পাম্প বসানোর কারণে ভূগর্ভের জলস্তর দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদরে সাধারণত ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২০ ফুটের নিচে নামলে হস্তচালিত নলকূপে পানি ওঠে না। বর্তমানে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় জলস্তর ২৪ ফুটের নিচে নেমে গেছে। ফলে বাসাবাড়িতে সাধারণ মোটর দিয়েও জল তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গভীর নলকূপগুলোতে জল উঠছে না। বিশাল সংখ্যক মানুষ সুপেয় জল ও দৈনন্দিন কাজের জলের অভাবে ভীষণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। প্রায় একমাস ধরে এই সংকট চলছে। মোটর দিয়ে সামান্য জল উঠলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। জল সংকটে অনেক পরিবার প্রতিবেশীর সাবমারসিবল পাম্প অথবা মসজিদের পাম্প থেকে জল সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন। শহরের কিছু বাসিন্দা পৌরসভা থেকে সরবরাহ করা জলের লাইনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা রাহেনা আক্তার জানান, “টিউবওয়েল থেকে এক ফোঁটাও জল বের হয় না। প্রতিবেশীর বাড়িতে পৌরসভার জলের লাইন আছে, সেখান থেকে জল এনে কাজ চালাই। অন্যের বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন জল আনা যে কী কষ্টের, তা বোঝানো যাবে না। এখন শুধু আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া, কয়েকদিন যেন বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলেই হয়তো আবার পাম্পে জল উঠবে।”
ভূগর্ভস্থ জলস্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার এই সংকটের অবিলম্বে সমাধানের জন্য সচেতন মহল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।